প্রকাশিত: Sun, Feb 18, 2024 11:46 AM
আপডেট: Tue, Jul 1, 2025 9:07 PM

[১]পুতিনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছিলেন নাভালনি

সাজ্জাদুল ইসলাম: [২] কারাগারে মৃত্য বরণকারী অ্যালেক্সি নাভালনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের কড়া সমালোচক ও তার দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। নাভালনি গত এক দশকে পুতিনের শাসনের বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছিলেন। রুশ কারা কর্তৃপক্ষ শুক্রবার ৪৭ বছর বয়েসি নাভালনির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। তবে কারণ জানানো হয়নি। বলা হয়েছে, হেঁটে আসার পর তিনি ভালো বোধ করছিলেন না। এরপর তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। চিকিৎসকেরা আর তার সংজ্ঞা ফেরাতে পারেননি। সূত্র : ওয়াশিংটন পোস্ট

[৩] নাভালনি রাশিয়ায় রাজনৈতিক পরিবর্তনপ্রত্যাশী ছিলেন। নাভালনির নিজের বিশাল রাজনৈতিক নেটওয়ার্ক ছিল। তিনি রাশিয়ার রাজপথে ব্যাপক বিক্ষোভের আয়োজন করতে সমর্থ হয়েছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও পুতিন ও তার মিত্রদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিলেন নাভালনি। কথিত দুর্নীতি নিয়ে তার ছাড়া ভিডিওগুলো ইউটিউবে অনেক দর্শক দেখেছেন। পুতিন তাকে এতটাই অপছন্দ করতেন যে প্রকাশ্যে তার নামও নিতেন না।

[৪] নাভালনি বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পুরস্কার জিতেছিলেন। তাকে অনেকবার আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছে। গৃহবন্দীও থাকতে হয়েছে। রুশ কর্তৃপক্ষ তার ব্যাংক হিসাবও জব্দ করে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পুতিনের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে দেওয়া হয়নি তাকে। কিন্তু নাভালনি নানা সৃজনশীল উপায়ে পুতিনের কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরোধিতা করে গেছেন।

[৫] ১৯৯৯ সালে রাজনীতিতে প্রবেশের আগে নাভালনি রাশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন ও ফাইন্যান্স নিয়ে পড়েছেন। রাজনীতি থেকে তাকে সরানোর আগে তিনি বিরোধী দল ইয়াবলোকোতে যোগ দেন। পরে তিনি ‘অ্যান্টিকরাপশন ফাউন্ডেশন’ নামে একটি দুর্নীতিরোধী সংস্থা গড়ে তোলেন। এ সংস্থার কাজ ছিল ক্রেমলিনের অভিজাত ব্যক্তিদের দুর্নীতির অনুসন্ধান। এ কাজের জন্য তার ওপর ক্ষুব্ধ হন অনেকে। ২০১৩ সালে মস্কোয় মেয়র নির্বাচনে ২৭ শতাংশ ভোট পেয়ে বিশ্লেষকদের চমকে দেন নাভালনি। 

[৬] ২০২০ সালে সার্বিয়ায় যাওয়ার পথে তাকে বিষ প্রয়োগ করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে রুশ কর্তৃপক্ষ। গত বছর নাভালনির আইনজীবী বলেন, নাভালনি আশঙ্কা করছিলেন, কারাগারে তাকে ধীরে ধীরে বিষ প্রয়োগ করে হত্যা করা হতে পারে। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে নাভালনিকে কারাগারে রাখা হয়। আন্তর্জাতিক অধিকার গ্রুপগুলোর অভিযোগ, তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ রাজনৈতিক। গত ডিসেম্বরে তাকে রাশিয়ার উত্তরে একটি কারাগারে পাঠানো হয়। ওই সময়েও তার অবস্থা ভালো ছিল বলে জানান তার মুখপাত্র।

[৭] নাভালনির মুখপাত্র কিরা ইয়ারমাইশ বলেন, নাভালনির বিরুদ্ধে ১৪টি মামলা করা হয়। সব মিলিয়ে তার ৩৫ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল। সাবেক সেনা কর্মকর্তার সন্তান নাভালনি নিজের দেশকে ভালোবাসতেন। তবে ক্রেমলিনের চোখে তিনি ছিলেন মার্কিন গোয়েন্দাদের চর। সম্পাদনা: ইমরুল শাহেদ